কেমন ছেলে বিয়ে করা উচিত হাদিস

ইসলামে বিবাহ একটি ধর্মীয় কাজ। মানুষের পুতঃপবিত্র জীবন যাপনে বিবাহ অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়। তাছাড়া বিয়ে হচ্ছে সব নবি রাসুলের অন্যতম সুন্নাত। আদর্শ পরিবার গঠনে স্বামীর (পাত্রের) জন্য স্ত্রী (পাত্রী) নির্বাচন যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি নারীর (পাত্রীর) জন্য স্বামী (পাত্র) নির্বাচনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

দেড় হাজার বছর পূর্বেই ইসলাম পাত্রের জন্য পাত্রী নির্বাচনে যেমন নির্দেশনা প্রদান করেছেন ঠিক তেমনি পাত্রীর জন্য পাত্র নির্বাচনেরও দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বর নির্বাচনের নারী যে বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিবে, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীর জন্য গ্রহণযোগ্য স্বামী নির্বাচনের জন্য সুস্পষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করে বলেন, ‘যখন তোমাদের নিকট এমন কোনো ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়, যার চরিত্র ও দ্বীনদারিতে তোমরা (পাত্রী) সন্তুষ্ট হবে। তবে তোমরা তার বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও। যদি তোমরা তা না কর, তবে তা পৃথিবীর মধ্যে বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং ব্যাপক বিশৃঙ্খলার কারণ হবে। (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)

কেমন ছেলে বিয়ে করা উচিত হাদিস

ঈমানদার

বিবাহের জন্য সবার প্রথম  ঈমানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাওহীদে বিশ্বাসী, নামাযী এবং সুন্নতের অনুসারী এমন কারো জন্য বেনামাযী, কবর, মাযার আর পীর পূজারী, মনপূজারী অথবা দুনিয়া পূজারী, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র বা প্রচলিত শিরকি-কুফুরীর রাজনীতির সাথে জড়িত এমন কাউকে বিয়ে করা যাবেনা।কোন মুশরেক পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না, যে পর্যন্ত না সে ঈমান আনে।

দ্বীনদারী বা ধার্মিকতা

দ্বীনদারি কে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে,নতুবা তাদের একজন দ্বীনদার আর অপর জন্য বেদ্বীন হলে তাদের মাঝে মতবিরোধ লেগেই থাকবে।এটা চলতেই থাকবে, যার উদাহরণ আজ সমাজে অহরহ।বিশেষ করে মেয়ে যদি পরিপূর্ণ দ্বীনদার হয়,আর ছেলে যদি দ্বীনদার না হয়,তাহলে সে অনেকাংশে ভালো ভাবে দ্বীনই মানতে পারেনা।সর্বদায় পর্দার সমস্যা হয়।একসময় এসে বিবাহ ভেঙ্গে যায়,যা মেয়ে এই ভাবেই চলতে থাকে,ছেলের পরিবর্তন কিছু ক্ষেত্র ব্যাতিত  অনেকাংশেই দেখা যায়না।তাই কোনো দ্বীনদার মহিলাকে এই বলে বেদ্বীন ছেলের সাথে বিবাহ দেওয়া যে তাকে বুঝিয়ে পরে দ্বীনদার বানিয়ে নেওয়া যাবে এটি ঠিক নয়।এতে মহিলার সাংসারিক জীবন অনেক কষ্টে চলে।
ইলম ও আমল
ইলম ছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষা বা বিপদ-আপদ ও ফেতনার সময়ে ঈমান নিয়ে টিকে থাকা খুবই কষ্টকর, যা বর্তমান যুগে খুব বেশি অনুভূত হচ্ছে।যদি ইলমের ব্যপারে ত্রুটি থাকে, তাহলে তার প্রভাব আপনার উপরেও পড়বে। রাসুল সাঃ বলেছেন, “একজন মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনের উপরেই আছে।”
কুফু বা সমতা
বিয়ের সময় নারী ও পুরুষের মাঝে অবশ্যই কুফু বা সমতার দিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ। দাড়ী কামাতে অভ্যস্ত, হারাম ইনকাম এমন কোন পুরুষের সাথে যদি ক্বুরানের হা’ফিজাহ কোন নারীকে বিয়ে দেওয়া হয়, আর বিয়ের পরে স্বামী তাকে মডার্ণ ড্রেস পড়তে বাধ্য করে, হিন্দী গান শোনানোর বায়না ধরে তাহলেতো প্রবলেম। সংসারে আর যাই হোক সুখ নামক নামক অচিন পাখিটা কখনো ধরা দেবেনা। তাই বিয়ের পূর্বে সার্বিক দিক বিবেচনা করে কুফু রক্ষা করা উচিৎ।
ইসলাম ধর্ম বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট করে কোনো বয়স নির্ধারণ করে রাখে নি। তবে ছেলের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যেন ছেলে উপার্জনের ক্ষমতার হয়। উপার্জন কখনো কখনো খুব অল্প বয়সের হতে পারে, সে যদি অবুঝ না হয় এবং সংসার এর দায়িত্ব নিতে সক্ষম হয় তাহলে তার বিয়ে দেয়া যাবে।
 হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, একদা নবী করিম সা. যুবকদের লক্ষ্য করে বললেন, হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যে বিয়ের যোগ্যতা রাখে না, তার উচিত রোজা পালন করা। (বুখারী ও মুসলিম)।
কেমন ছেলে বিয়ে করা উচিত হাদিস, ইসলামে কেমন ছেলে বিয়ে করা উচিত, কেমন ছেলেদের বিয়ে করা উচিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেনঃ kfsoft@yahoo.com যে কোন প্রয়োজনেঃ kfplanetbd@gmail.com
KFPlanet BD Blog