চিকন থেকে মোটা হওয়ার সহজ উপায় জেনে নিন
আজ আমি আপনাদের সাথে চিকন থেকে মোটা হওয়ার সহজ ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করব।কীভাবে আমরা ঘরোয়া উপায়ে ওজন বৃদ্ধি করতে পারব? এই স্বাস্থ্য বিষয়ক পেজে আপনারা জানতে পারবেন, এবং খুব দ্রুত নিজের ওজন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবেন।
পৃথিবী জুড়ে যেখানে চিকন হওয়ার ধুম, সেখানে অনেকেই নিজের ওজন বৃদ্ধি করতে চান অর্থাৎ মোটা হতে চান। অধিক মোটা হওয়া যেমন দুশ্চিন্তার কারণ তেমনি অতিরিক্ত চিকন হওয়া ও একজন মানুষের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হওয়ার জন্য যথেষ্ট। অধিক চিকন একজন মানুষকে মানসিকভাবে হতাশা গ্রস্থ করে তোলে।তাই কীভাবে আমরা চিকন হওয়ার ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবো সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-
চিকন থেকে মোটা হওয়ার সহজ উপায়
দ্রুত মোটা হতে চাইলে জানতে হবে কিছু উপায় ও নিয়মাবলী। যার ফলে আপনি মাত্র ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে হয়ে উঠবেন স্বাভাবিক স্বাস্থের অধিকারী।
মোটা হওয়ার পূর্ব শর্ত হল পরিমিত ও সুষম খাদ্য গ্রহন করা। প্রতিদিনের খাওয়ার পরিমাণ একটু একটু করে বৃদ্ধি করতে হবে। যেমন আপনি প্রতিদিন যেটুকু খান তার ৪ ভাগের ১ভাগ খাবার বেশি খেতে হবে।বেশি পরিমাণ খাবার খেলে আমাদের দেহে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়। আর অধিক খাবার আমাদের দেহে চর্বি হিসেবে জমা থাকে। যা আমাদের মোটা হতে সাহায্য করে।
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন। অনেকের একটা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীর আরও চিকন হয়ে যায়। এটা সম্পূর্ণ একটা ভুল ধারণা।মোটা হওয়ার অন্যতম সহজ উপায় হল নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা। ব্যায়ামের ফলে শরীরে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়ে এবং মাংশ পেশি ফুলে ওঠে। তবে অতিরিক্ত ব্যায়ামের ফলে আরও চিকন হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
পরিমিত ঘুমান। অধিক ঘুম আপনার শরীরকে দুর্বল করে দিতে পারে। তাছাড়া স্বাভাবিক ঘুমের থেকে একটু কম ঘুমান। আপনার ঘুমের পরিমাণ যদি প্রতিদিন ৮ থেকে সাড়ে ৮ ঘণ্টা হয়, তবে আরও ৩০ মিনিট কম ঘুমাএ হবে।কেননা স্বাভাবিক এর চেয়ে কম ঘুমালে শরীরে হরমোনের কিছুটা পরিবর্তন হয়, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।
দুশ্চিন্তা শরীর শুকিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।দুশ্চিন্তা করার ফলে মস্তিস্কের পাশাপাশি শরীরেও চাপ সৃষ্টি করে।তাই শরীর ভালো রাখতে দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করতে হবে। সবসময় দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
দীর্ঘ সময় শুয়ে বসে কাটান। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে শুয়ে থাকা বা বসে থাকার জন্য শরীরে চর্বি জমা হয় যার ফলে আপনি দ্রুত মোটা হতে পারবেন।তবে সারা দিন শুয়ে বা বসে থাকলে শরীরে অলসতা ভর করতে পারে, যার ফলে শরীরে বিভিন্ন রোগের দেখা দিতে পারে। যা আপনার শরীরের জন্য মারাত্মক ঝুকি হতে পারে।
মোটা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের তালিকা
রোগা ও পাতলা শরীরকে মোটা করার জন্য আমাদের প্রতিদিন যেসকল খাদ্য গ্রহন করতে হবে সে গুলোর একটা তালিকা নিম্নরুপ–
ভাতঃ ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও ফ্যাট।মোটা হতে পাইলে প্রতিদিনের চেয়ে অল্প পরিমাণে নিয়মিত ভাতের সাথে আরও বেশি ভাত খেতে হবে। আরও শর্করা জাতীয় খাবার রুটি বা আটা জাতীয় খাবার বেশি না খেয়ে ভাত খাওা উচিত।কেননা ভাত আমাদের দ্রুত মোটা হতে সাহায্য করে।
ভাতের মাড়ঃ আমরা সাধারনত ভাত রান্নার সময় ভাতের মাড় ফেলে দি। কিন্তু ভাতের অধিকাংশ পুষ্টি ভাতের মাড়েই থেকে যায়। প্রতিদিন ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি মোটা হতে পারবেন।
আলুঃ আলু শর্করা জাতীয় খাবার। আলুতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের দ্রুত মোটা হতে সহায়তা করে।মোটা হতে চাইলে আলুর ভুমিকা অধিক। বেশি পরিমাণ আলু খাওয়াই হল মোটা হওয়ার সহজ উপায় তাই মোটা হতে চাইলে বেশি বেশি আলু খেতে হবে।
ডিমঃ মোটা হওয়ার জন্য ডিমের ভুমিকা অনেক। ডিমে রয়েছে অধিক পরিমাণে আমিষ,শর্করা ও প্রোটিন।তাই মোটা হতে চাইলে প্রতিদিন ডিম খেতে হবে। তবে অনেকে ভাবে কাচা ডিমে পুষ্টি বেশি, এটা সম্পূর্ণ ভুল একটা ধারণা।এর ফলেয়ামাদের শরীর জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে।
গরুর মাংসঃ দ্রুত মোটা হতে চাইলে গরুর মাংস খেতে হবে। গরুর মাংস আমাদের শরীরকে দ্রুত মোটা হতে সহায়তা করে। গরুর মাংস খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে চর্বি ও শক্তি বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে আমরা দ্রুত মোটা হতে পারব।
পানিঃ পানি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
এছারাও আরও বিভিন্ন খাবার রয়েছে যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে ও চিকন শরীরকে মোটা করে তোলে।নিয়মিত রাতের বেলা এক গ্লাস দুধ পান করতে হবে। ঘি, মাখন ও অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে হবে। তবে পরিমিত খেতে হবে কেননা অধিক মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের বিভিন্ন রোগ হতে পারে। বাদাম কিসমিস, শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে যাতে আমাদের শরীর শক্তি পায় এবং দ্রুত মোটা হয়ে ওঠে।
আমরা যদি প্রতিনিয়ত এসকল নিয়ম ও খাদ্য তালিকা মেনে চলতে পারি তবেই দ্রুত ও সহজে রোগা ও পাতলা শরীরকে মোটা করে তুলতে পারব। শরীরের সুস্থতা ও আত্মবিশ্বাস অর্জনের জন্য আমাদের এসকল উপায় মেনে চলতে হবে।