প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন?

কোভিড ১৯ মহামারি কারণে সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল । এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রাইমারি নিয়োগ পরীক্ষা হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে করোনা সংক্রমণের হার কমলেই। ২০২৩ সালে সরকারি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে ৩২ হাজার ৫৭৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আমরা তুলে ধরব কিভাবে অল্প সময়ে  প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন? এ পদের জন্য প্রায় ১৩ লাখ চাকরিপ্রত্যাশী আবেদন করেছেন। অর্থাৎ, একটি পদের জন্য ৪০ জন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিযোগিতা করবেন। আরও সহজভাবে বললে, গড়ে প্রতি ৪০ জনে ১ জন পাবেন কাঙ্ক্ষিত চাকরি।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানা গেছে বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদে। পরীক্ষা শুরু হবে শুনে অনেকেই চিন্তিত। তারা ভাবছেন, ‘এতদিন তেমন কিছু পড়লাম না, এখন কীভাবে কী করব? কীভাবে এত কম সময়ে ভালো প্রস্তুতি নেব? কীভাবে পরীক্ষায় পাস করতে পারব? আমি কি আসলে পরীক্ষায় পাস করতে পারব?’

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন?

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গত ১৯ অক্টোবর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।হাজারো চাকরি প্রার্থী এই নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছিল এবং অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় । নিয়োগ প্রকাশের পর অনেকেই নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতির কথা ভাবছেন ।

প্রাইমারি নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক মানবন্টন

ইংরেজি= ২০

বাংলা – ২০ = বাংলা সাহিত্য- ৩, বাংলা ব্যাকরণ -১৭।

গণিত- ২০= পাটিগনিত – ৮/৯,বীজগনিত – ৫/৬,জ্যামিতি ৫।

সাধারণ জ্ঞান- ২০=বাংলাদেশ বিষয়াবলী – ৭/৮,আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী – ৫/৬,সাম্প্রতিক বিষয়াবলী – ৫/৬।

মৌখিক পরীক্ষা =২০

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি যে ভাবে নিতে পারেন

২০২৩ সালে সরকারি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে ৩২,৫৭৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ পদের জন্য প্রায় ১৩ লাখ চাকরিপ্রত্যাশী আবেদন করেছেন। প্রথমে আপনি ভুলে যান, কতজন চাকরির পরীক্ষা দেবেন। শুধু নিজের প্রতি আস্থা রাখুন, ৩২ হাজার নয় যদি ৩২ জনও নিয়োগ দেয়, তাহলে তাদের মধ্যে আমি একজন থাকব। এই রকম মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে । আত্মবিশ্বাস টা অনেক বেশি জরুরি, সব সময় পজেটিভ ভাবে নিয়ে চেষ্টা চালয়ে যেতে হব।

মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে চাকুরীর জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। এই ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮০ নম্বরের MCQ পদ্ধতির পরীক্ষা, বাকী ২০ নম্বরের ভাইভা। বাংলা, ইংরেজি,সাধারণ জ্ঞান, গণিত বিষয় গুলিতে যে সব পরিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন, তারাই মৌখিক পরীক্ষায় ( ভাইভা) অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন।

বিষয় সমূহে নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক

বাংলাঃ

বাংলা ভাল ভাবে প্রস্তুতি নিতে হলে কিছু উপায় গুলি আপনাকে অবলম্বন করতে হবে। প্রথমে আপনাকে যা করতে হবে ক্লাস ওয়ান থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত আবশ্যিক বাংলা বইয়ে যেসব কবি সাহিত্যিকের গল্প-কবিতা রয়েছে, তাদের জীবন ও সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে ছন্দেছন্দে বা অদ্যাক্ষর দিয়ে সাহিত্যকর্ম মুখস্ত রাখতে হবে , তবে এই কাজ টি একটু কঠিন হয়ে যাবে আপনার জন্য , তবে ভাল একটি উপায় হল বার বার ঐ তথ্য গুলি চোখ বুলিয়ে নেওয়া । এর ফলে আপনার মনে থাকার জোর সম্ভাবনা থাকবে।

এভাবে একবার, একশবার, হাজারবার পড়তে হবে। ইনশাআল্লাহ কোন সাহিত্যকর্ম নাম শুনলে বলে দিতে পারবেন, কার লেখা, কখন লেখা, কি প্রকৃতির লেখাসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য।

=) শুধু ব্যাকরনের জন্য ভাল উপায় হল নবম-দশম শ্রেনীর ব্যাকরন বই  প্রথম থেকে শেষলাইন মুখস্ত নিন, আরও ভাল প্রস্তুতির জন্য কিছু ভাল মানের বাংলা ব্যাকরণ বই কিনে পড়তে পারেন।

ইংরেজিঃ

মনে রাখবেন ইংরেজি ভাল ভাবে প্রস্তুতি নিলে অন্য প্রতিযোগীদের তুলনায় আপনাকে অনেক খানি এগিয়ে রখবে।সে জন্য ইংরেজির ওপর সুস্পষ্ট দখল নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। তাই এ লক্ষ্যে কাজ যত শুরু করবেন ততই আপনার জন্য ভাল।

আপনি যে বই গুলি পড়তে পারেন  English for competitive exam । এই বইটি ভাল প্রস্তুতির জন্য, এই বইটা পড়লে যেকোন পরীক্ষায় বসার মত ইংরেজির প্রস্তুতি হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিগত বছরের প্রশ্নও এতে কভার হয়ে যাবে।

saifur’s vocabulary  এই বইটি ভালমতো মুখস্ত করতে পারলে অন্তত ভোকাবুলারি নিয়ে যে আপনাকে আর ভাবতে হবে না, এই কথা টি সাইফুর স্যারের হেটার্সরাও অবলীলায় মেনে নিতে বাধ্য।

চৌধুরী এন্ড হোসাইন স্যার লিখিত advanced learners বইটির সম্পূর্ণ গ্রামার অংশ।  এই বই টির বড় সুবিধা হল এই বইটি আমাদের প্রায় সবারই আগে থেকে পড়া আছে, তাই পড়াটা সহজ হবে।

সাধারণ জ্ঞানঃ

বেশিরভাগ মানুষ সাধারণ জ্ঞান বলতে আজকের বিশ্ব, নতুন বিশ্ব বইকেই বুঝেন। এসব বইয়ের ক্ষেত্রে আমার মূল্যায়ন হল, এটাইপের বই চাকুরির পরীক্ষার জন্য যতটা না প্রস্তুত করবে, তারচেয়ে বেশি পিছিয়ে দিবে।

কারন ২/৩ মাস সময় নিয়ে একবার পড়ে আসার পর যখন দেখবেন সব ভুলে বসে আছেন, তখন হতাশায় পেয়ে বসার মতো বৃহৎ ক্ষতির সম্ভাবনা ও আছে। এক্ষেত্রে আমি মনে করি

=) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে ভালমতো জেনে নিন। নির্দিষ্ট কোন বই না পড়ে উইকিপিডিয়া থেকে সার্চ দিয়ে রিলেটেড টপিক প্রিন্ট করে নিতে পারেন।

=) দিনে কমপক্ষে একবার হলেও আপনার পছন্দের যে কোন একটি চ্যানেলের সংবাদ মনযোগ দিয়ে শুনুন।

=) একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকা রাখুন। খেলার পাতা, নকশা, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক হালচাল।

=) নবম শ্রেনির বাংলাদেশে ও বিশ্ব পরিচয় ভাল করে দেখবেন।

গণিতঃ

=) ৪র্থ/৫ম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্যবইগুলো কোন অভিজ্ঞ টিচার/ বড়ভাইয়ের সহযোগিতা নিয়ে ধীরে ধীরে করতে থাকুন। ( দুচারদিন পর ধৈর্যহারা হয়ে আমাকে গালিগালাজ শুরু কইরেন না)

=) পাটিগণিত ও বীজ গনিতের প্রিলির প্রশ্নের একটা বড় অংশই ব্যাকসলভিং মেথডে করা যায়। তাই এই পদ্ধতিতে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে প্রস্তুতি পর্বের পরিধি কমে আসবে নিঃসন্দেহে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেনঃ kfsoft@yahoo.com যে কোন প্রয়োজনেঃ kfplanetbd@gmail.com