বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ম্যলেরিয়া একটি আতংকের নাম। আমদের সমাজে প্রচলিত ম্যালেরিয়া নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারনা আছে । অনেকে মনে করে ম্যালেরিয়া হলে জীবন নিয়ে আর ফিরে আসা যায় না । কিন্তু আপনি একটু সচেতন থাকলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাংলাদেশে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে এখন ম্যালেরিয়া রোগ অনেক সহজে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমরা ম্যালেরিয়া জ্বরের চিকিৎসা ও ম্যালেরিয়া হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপন করব। ম্যালেরিয়া জ্বর বাংলাদেশে প্রকট আকার ধারন কারার ফলে ,এই রোগ নিয়ে অনেক গবেষণা করা হয়,কিভাবে ম্যালেরিয়া জ্বরের চিকিৎসা ও ম্যালেরিয়া হলে করণীয় কি এই সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য নিতে থাকে।
ম্যালেরিয়া জ্বরের চিকিৎসা
একটা সময় ছিল ম্যলেরিয়া হলে মনে করা হত মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি , কিন্তু বর্তমান সময়ে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকটা সমাধান হয়েছে। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। ম্যালেরিয়া জ্বরের চিকিৎসা এখন অনেক ভাল হয় আমাদের দেশে , এল্যোপ্যাথিক ঔষধ এর মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা হচ্ছে।
চলুন ম্যালেরিয়া জ্বরের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
- প্রত্যেক নাগরিক সচেতনতা অবলম্বন প্রয়োজন।
- দরজা-জানালায় মশক নিরোধক জাল।
- প্রতিরোধক ক্রিম, স্প্রে ব্যবহার করা।
- আশপাশে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে ।
- ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি বা কয়েল ব্যবহার করা।
- যত টা সম্ভব মশার কামড় থেকে দূরে থাকতে হবে ।
- মেফ্লোকুইন, ক্লোরোকুইন, ক্লোরোকুইন ও প্রোগুয়ানিল, এটোভাকোন + প্রোগুয়ানিল, এবং ডক্সিসাইক্লিন, এই ঔষধ গুলি ম্যালেরিয়া এলাকায় ভ্রমণ করলে খেতে হয়।
- আর্টেমিসিনিন’ হল ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা ওষুধগুলোর মধ্যে একটি।
ম্যালেরিয়া হলে করণীয়
ম্যালেরিয়া হলে ভয় পাওয়ার কোন কারন নেই , কারন ম্যালেরিয়া হলেই যে মৃত্যু হবে এমনটা এখন অনেকটা অবাস্তব। ম্যালেরিয়া বাংলাদেশ বর্তমানে ভাল ভাবে মোকাবেলা করছে। ম্যালেরিয়া হলে করণীয় গুলি আপনাদের সামনে সুন্দর করে দেখাব
- ম্যালেরিয়া হলে সর্ব প্রথমে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।
- ম্যালেরিয়া হলে খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়।
- রোগীকে হালকা ধরনের খাবার দিতে হয়।
- বিশেষ করে তরল খাবার দেওয়া উচিত।
- ডাবের পানি খেতে হবে ।
- বেশি করে স্যালাইন পানি খেতে হবে ।
- আপনার শরীরে মশা না বসতে পারে সেজন্য ঘুমানোর আগে মশারি ও কয়েল জালিয়ে ঘুমাতে হবে।
- জানালা ও দরজায় নেট দিতে হবে যেন মশা না আসতে পারে।
- বাড়ির আশপাশে কোনো ঝোপ-জঙ্গল থাকলে তা পরিষ্কার রাখতে হবে।
- বাড়ীর পাশে কোন কিছুতে পানি জমে থাকলে সে গুলি ফেলে দিতে হবে ।
ম্যালেরিয়া বিষয়ক কিছু তথ্য তুলে ধরা হল:
১। ম্যালেরিয়া হয় এনোফিলিস মশার মাধ্যমে ।
২। ম্যালেরিয়ার অন্যতম লক্ষণ কীপুনি দিয়ে বার বার জ্বর আসবে।
ও। ম্যালেরিয়ার লক্ষণ দেখামাত্র দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।
8। ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় রক্তপরীক্ষা ও ওষধপত্র সবকিছু আপনাকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে।
ম্যালেরিয়া বিষয়ক সতর্কবার্তা গুলি :
১। ম্যালেরিয়াপ্ববণ এলাকায় বসবাস/ভ্রমণকালীন সময়ে জর হলে বিনামূল্যে রোগ সনাক্তকরণ ও ওঁষধের জন্য
স্থানীয় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্ সরকারি , এনজিও কমী/ল্যাবে যোগাযোগ করবেন।
২। ম্যালেরিয়াপ্ববণ এলাকা থেকে ফিরে এসে জ্বর হলে আপনার চিকিৎসককে জানান।
৩।জ্বরের সাথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, অস্বাভাবিক আচরণ করা, বারবার খিচুনি, বমি হওয়া, অত্যধিক দুর্বলতা, শিশুর
ক্ষেত্রে মায়ের দুধ বা অন্য খাবার খেতে না পারা- এ সব গুলি ম্যালেরিয়ার রোগের প্রধান লক্ষণ।
৪।ম্যালেরিয়ার রোগের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করুন।
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কি কি করবেন :
১। ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী কীটনাশকযুক্ত মশারি ব্যবহার করতে হবে।
২। ম্যালেরিয়া প্রবণ অঞ্চলে ভ্রমণ করতে গেলে যতটা সম্ভব মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।
৩। ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকায় রাত্রিযাপন করতে হলে মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমান অথবা স্প্রে করে/ কয়েল ব্যবহার
করবেন ।
৪। রাতের বেলায় বাইরে গেলে হাত-পা ঢাকা যুক্ত কাপড় পরিধান করুন ও মশার কামড় প্রতিরোধে
ক্রিম/লোশন নিজের শরীরে ব্যবহার করুন।
৫। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে করতে হলে বাড়ির চারপাশে ঝোপঝাড়, ডোবা, নালা, পুকুর ও গর্ত নিয়মিত পরিষ্কার করুন।