রমজান মাসের দোয়া ও আমল সমূহ (বিশেষ দোয়া দরূদ জেনে নিন)

রমজান মাস প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসের অনেক ফযিলত মর্যাদা রয়েছে। আরবী যে ১২ মাস আছে তার মধ্যে রমজান মাস প্রত্যেক বান্দার কাছে অনেক বেশি ফজিলত বহন করে, কারন রমজান মাস কে গুনাহ মাফের মাস বলা হয়। আমদের এই অনুচ্ছেদে আজ রমজান মাসের দোয়া সমূহ বিস্তারিত আলোচান করব। রমজান মাস পুরোটাই মূলত রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আল্লাহর বান্দারা দোয়া করবে। দোয়া হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে বান্দার কথোপকথনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। মাহে রমজান দোয়া কবুলের সময়। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হতো, নবী করিম (সা.) তখন এ দোয়াটি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান। রজব ও শাবান মাস আসার সাথে সাথে বেশি বেশি করে এই দোয়া পড়তে হবে।

পোস্টের সূচী এক পলকে দেখুন!

রমজান মাসের দোয়া সমূহ

নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের নিদ্রা ইবাদততুল্য, চুপ থাকা তাসবিহ-তাহলিলতুল্য, আমল ইবাদত সওয়াব হাসিলে বেশি অগ্রগণ্য, দোয়া কবুলযোগ্য ও তার গুনাহ ক্ষমার যোগ্য। প্রত্যেক মুসলমানদের রমজান মাসের দোয়া সমূহ ভাল ভাবে জানতে হবে। কারন এই মাসে দোয়া করলে অনেক সোয়াব পাওয়া যায়।

নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাস জুড়ে তাসবিহ, ইসতেগফার ও দোয়ার মাধ্যমে অতিবাহিত করা ছিল উম্মতের জন্য বিশেষ নসিহত। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। তাঁদের একজন হলেন রোজাদার ব্যক্তি। তিনি আরও বলেছেন রমজান মাসে তোমরা ৪টি কাজ বেশি বেশি আদায় কর।

১. বেশি বেশি করে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”-এর জিকির করা।

২. আল্লাহর কাছে মাগফিরাত তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা।

৩. জান্নাত চাওয়া।

৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া।

রমজান মাস মূলত রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আল্লাহর বান্দারা দোয়া করবে। আল্লাহ অনেক দয়ালু, বান্দা পাহাড় সমান গুনাহ করেও আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইলে তিনি মাফ করে দেয়।

রমজান মাসের দোয়া ও আমল

রমজান মাস গুনাহ মাফের মাস, দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মধ্যে রমজান মাসে দোয়া ও আমল বেশি বেশি করে করতে হয়। অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে দোয়া ও আমলের জন্য বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। সেজন্য বেশি বেশি দোয়া ও আমল করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এমন দুটি বাক্য আছে যে গুলি খুব সহজে আমল করতে পারেবন কিন্তু কিয়ামতের দিন আমলনামা ওজনের পাল্লায় খুব ভারী এবং আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয় এই দোয়া। দোয়াটি হল ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম।’ (বুখারি ও মুসলিম)। রমজান মাসে চারটি দোয়া বেশি বেশি করে আমল করতে বলেছেন।  এর মধ্যে দু’টি কাজ আল্লাহর জন্য আর দু’টি কাজ তোমাদের নিজেদের জন্য। তবে দোয়া করলে একাকী দোয়া করা। সব সময় মনে মনে আল্লাহ কাছে ক্ষমা চাওয়া তবে আপনার ওযু না থাকলেও দোয়া করতে পারেবন। যে দু’টি কাজ না করে তোমাদের রক্ষা নেই তা হলো- তোমরা জান্নাত প্রার্থনা করবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করবে। -সহিহ ইবনে খুজাইমা

রমজান মাসের দোয়া দরুদ

আরবি অন্যান্য মাসের থেকে রমজান মাসে সকল দোয়া কালাম ও দরুদ আমল করলে আল্লাহর কাছে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। সেজন্য রমজান মাসে দোয়া দরুদ বেশি করে আমল করতে হবে। অনেক দোয়া পরকালের জন্য জমা রাখা হয় অথবা দোয়ায় যা চাইছেন তা আপনার জন্য কল্যাণকর নয়। আমরা আল্লাহতায়ালার কাছে রহমত চাইতে পারি এবং মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে পারি। আল্লাহুম মাগফিরলি ওয়াতুব আলাইয়া’ ধরনের দোয়া করতে পারেন,আসতাগফিরুল্লাহা… ওয়াতুব ইলাইহে। যেগুলোতে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা রয়েছে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির এই দোয়া দরুদ গুলি বেশি করে পড়তে হবে। আয়াতুল কুরসি, ইসমে আজম বা আল্লাহর ৯৯টি নামের অর্থসহ আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরিফসহ দোয়া করলে তা কবুল হয়। আল্লাহর প্রশংসা যেমন, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’ দোয়ার শুরুতে বলা। ‘ওয়া ইলাহুকুম ইলাহু ওয়াহিদুন লা ইলাহা ইল্লা হুয়ার রাহমানুর রাহিম।

হজরত আদম (আ.) থেকে এ পর্যন্ত যত নর-নারী পৃথিবীতে এসেছেন এবং কবরে শায়িত আছেন, তাঁদের সবার জন্য দোয়া করতে হবে। রাতের শেষ তৃতীয়াংশে অজু করে পবিত্র হয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ে ও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে সুবাহানাল্লা (আল্লাহ পবিত্র) আলহামদুলিল্লাহ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য) আল্লাহু আকবার (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ) ইয়া ওয়াহহাব (আল্লাহ সবকিছু দানকারী) আসতাগফিরুল্লাহ (আমি আমার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি) দোয়া ইউনুছ তথা লা ইলাহি ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন-তু মিনাজ জোয়ালেমিন (আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, আল্লাহ পবিত্র মহান, আমি তো সীমা লঙ্ঘনকারী) এবং রাসুল (সা.)–এর ওপর দরুদ শরিফ আমল করলে ,দোয়া হয়।

ইফতারের আগে ও পরে, সাহ্‌রির আগে ও পরে, তাহাজ্জুদ নামাজের শেষে আল্লাহর কাছে প্রাণভরে দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তা কবুল করেন। রমজান মাসে বেশি করে আল্লাহর কাছে ক্ষাম চাওয়া নিজের পিতা-মাতার জন্য দোয়া করা। রমজান মাস কে বলা হয় দোয়া কবুলের মাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেনঃ kfsoft@yahoo.com যে কোন প্রয়োজনেঃ kfplanetbd@gmail.com