রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

আমরা সবাই জানি রসুন রান্নায় স্বাদ হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি প্রাচীন ও আধুনিক ইতিহাস জুড়ে ওষুধ হিসাবে বহুল ব্যবহৃত হয়।এটি হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ ব্যবহার করে আসছে এবং প্রাচীন মিশরে এটি রন্ধনসম্পর্কীয় উদ্দেশ্যে এবং এর স্বাস্থ্য এবং চিকিত্সার সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হত।রসুনের উচ্চ সালফারযুক্ত উপাদান এটিকে অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য দেয়, বিষাক্ত পদার্থগুলি বের করে দিয়ে পাচনতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। এটি সাধারণ সর্দি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অবরুদ্ধ ধমনীগুলি পরিষ্কার করে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।আজ আপনাদের জানাবো রসুনের উপকারি ও অপকারি দিকগুলো।

পোস্টের সূচী এক পলকে দেখুন!

রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা

রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা
visa.kfplanet.com

উপকারিতা

১।ঠান্ডা ও সর্দির ক্ষেত্রেঃযাদের স্থায়ীভাবে ঠান্ডা ও ফ্লুর সমস্যা আছে রসুন তাদের এটা থেকে মুক্তি দিতে পারে।প্রতিদিন কাঁচা বা রান্না করা রসুনের  সাথে ২-৩ টি লবঙ্গ খান বা কিছু রসুনের কোয়া চায়ের চুমুক সর্দি বা ঠান্ডা থেকে মুক্তি দেবে আপনাকে। তবে এটি শূধু ঠান্ডা নিরাময় করে না তবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায় ।

২।হার্টের সমস্যার সমাধানঃঅ্যালিসিনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রতিদিন  রসুন গ্রহণ কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে। রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও এটি প্রচুর উপকারী। এটি মনে রাখা অপরিহার্য যে সালফারযুক্ত যৌগটি অ্যালিসিন রসুন পুরো রান্না হয়ে গেলে তার ওষধি গুণগুলি হারাতে থাকে। রসুনের উপকারীগুন পেতে এটি কাঁচা বা আধা-রান্না করা অবস্থায় খেতে হবে।

৩।ব্যাক্টেরিয়া ধংস করেঃ রসুন বিগত যুগের অন্যতম সেরা ওষধি পন্য।  এটি গত 7,000 বছর ধরে ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক এবং পরজীবী সংক্রমণের চিকিত্সার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

৪।ক্যান্সার প্রতিরোধেঃবেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন  রসুন সেবনে পেট এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে।

৫।ত্বক ও চুলের জন্যঃরসুনের উদ্দীপক বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিকালগুলির প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং কোলাজেনের হ্রাসকে ধীর করে দেয় যা বৃদ্ধ বয়সে ত্বকে স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পায়। তাছাড়া রসুন ছত্রাকের সংক্রমণে আক্রান্ত ত্বকে আশ্চর্যভাবে করে এবং একজিমার মতো  ত্বকের অসুস্থতা থেকে মুক্তি দেয়।  এবং দাদরোগের মতো ছত্রাকের সংক্রমণেরও কার্যকর প্রতিকার। আমরা সবাই চুলের জন্য পেঁয়াজের বিস্ময়কর জিনিস সম্পর্কে জানি তবে এর ভাই, রসুন পেয়াজের চেয়ে কোনও  অংশে কম নয়। আপনার মাথার ত্বকে পিষে রসুনের নির্যাস মাখানো বা রসুন-আক্রান্ত তেল দিয়ে মালিশ করা চুল পড়া রোধ করে।

৬।যক্ষ্মা প্রতিরোধকঃরসুনে এতো উপাদান যে যদি আপনার যক্ষ্মা বা টিবি জাতীয় কোন সমস্যা ধরা পড়ে, তাহলে সারাদিনে একটি সম্পূর্ণ রসুন কয়েক অংশে বিভক্ত করে বার বার খেতে থাকলে। যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে করা সম্ভাব।

৭।যৌনতা বৃদ্ধিতে রসুনের ভূমিকাঃপ্রতিদিন নিয়ম করে কয়েককোয়া কাঁচা রসুন খেলে শরীরের যৌবন দীর্ঘ স্থায়ি হয় । যারা পড়ন্ত যৌবনে চলেগিয়েছেন, তারা প্রতিদিন দু’কোয়া রসুন খাঁটি গাওয়া ঘি-এ ভেজে মাখন মাখিয়ে খেতে পারেন। তবে খাওয়ার শেষে একটু গরম পানি বা দুধ খাওয়া উচিৎ। এতে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
যৌবন রক্ষার জন্য রসুন অন্যভাবেও খাওয়া যায়। কাঁচা আমলকির রসদুই বা এক চামচ নিয়ে তার সাথে এক বা দুই কোয়া রসুন বাটা খাওয়া যায়। এতেস্ত্রী-পুরুষ উভয়ের যৌবন দীর্ঘস্থায়ি হয়।

অপকারীতা

রসুনে যে শুধু উপকারী দিক আছে তা না এর বেশ কিছু অপকারী দিক ও আছে।

১।যকৃতের ক্ষতি: রক্ত পরিশোধন, চর্বি ও প্রোটিন বিপাক, শরীর থেকে অ্যামোনিয়া অপসারণ ইত্যাদি হল যকৃতের অন্যতম কাজ। গবেষণা বলে, রসুনে থাকা ‘অ্যালিসিন’ উপাদান যকৃতে বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে যদি মাত্রাতিরিক্ত রসুন খাওয়া হয়।

২।ডায়রিয়া: খালি পেটে রসুন খেলে ডায়রিয়া হতে পারে। কারণ রসুনে আছে সালফার যা পেটে গ্যাস তৈরি করে এবং ডায়রিয়া হওয়ার পেছনে এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে।

৩।বমি ও বুক জ্বালাপোড়া: যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, খালি পেটে তাজা রসুন সেবন করলে বুক জ্বালাপোড়া, বমিভাব ও বমি হতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকাল স্কুলের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, রসুনের এমন কিছু উপাদান আছে যা জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রোয়েসোফাজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ হওয়ার কারণ।

৪।দুর্গন্ধ: রসুন বেশি খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। এর প্রধান কারণ রসুনে থাকা সালফার।

৫।রক্তপাত বাড়ায়: রক্তের ঘনত্ব কমানোর প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে খ্যাতি আছে রসুনের। তাই যারা ‘ওয়ারফারিন’ ‘অ্যাসপিরিন’ ইত্যাদি ‘ব্লাড থিনার’ ধরনের ওষুধ সেবন করেন তাদের অতিরিক্ত রসুন খাওয়া উচিত হবে না। কারণ এতে রক্ত অতিরিক্ত পাতলা হয়ে আভ্যন্তরীন রক্তপাত শুরু হতে পারে।


কাঁচা রসুনের উপকারিতা কি,এক কোয়া রসুনের উপকারিতা কি,এক কোয়া রসুন এর উপকারিতা,মধু ও রসুন এর উপকারিতা,আদা ও রসুনের উপকারিতা,সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়ার নিয়ম,কাঁচা রসুন খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া,kfplanet.com,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেনঃ kfsoft@yahoo.com যে কোন প্রয়োজনেঃ kfplanetbd@gmail.com