শিশুর জ্বর হলে প্রত্যেক বাবা-মা চিন্তিত হয়ে পড়েন। সর্বপ্রথম ধৈর্য ধরুন। আর আমাদের শিশুর জ্বর হলে করণীয় কি? আর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আমরা বাংলাদেশের স্বনামধন্য ডাক্তারের পরামর্শগুলা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
জ্বরঃ প্রথমে জানতে হবে, জ্বর হয়েছে কখন বুঝবেন?
সবচেয়ে সহজ উপায় হলো থার্মোমিটার ব্যাবহার করা। বাচ্চাদের ৯৯ বা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে উঠলে জ্বর হিসেবে কাউন্ট করবেন। যদি একুরেট হিসেব করতে যান তাহলে www.advil.ca এর মত গ্রহন করতে হবে। এই ওয়েবসাইটের গবেষণাতে বলা হয়েছে ৫ বছরের মধ্যে থাকা শিশুদের ১০০.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে জ্বর হিসেবে গন্য করা হবে।
শিশুর জ্বর কেন হয়?
জ্বর কোন রোগ নয়। জ্বর বাচ্চাদের শরীর অসুস্থতা নির্দেশ করে। তাই বলা হয় জ্বর হলো যেকোন রোগের উপসর্গ। টনসিলে সংক্রমণ, কানে সংক্রমণ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, নিউমোনিয়া, হাম, প্রস্রাবের সংক্রমণ, রক্ত আমাশয়, মেনিনজাইটিস, এনকেফেলাইটিস, হার্টে সংক্রমণ ইত্যাদি কারনে আপনার সোনামণির জ্বর আসতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা কেমন ও ডেঙ্গু জ্বরে করণীয় কি? বিস্তারিত
শিশুর জ্বর হলে করণীয় কি?
- ডিজিটাল থার্মোমিটার, ইনফ্রারেড বা পারদ থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা জেনে জ্বর নিশ্চিত হোন।
- মুখে না দিয়ে বগলের নিচে থার্মোমিটার রেখে জ্বরের পরিমাপ করুন।
- নিচে দেয়া শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়গুলা পড়ুন। আশা করি আমাদের দেয়া টিপসগুলা যথাযথ প্রয়োগ করলে জ্বর কমে যাবে।
- এছাড়া জ্বর ০৩-০৪ দিন থাকলে বা ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে যেতে থাকলে অথবা প্যারাসিটামল খেয়ে না কমলে ডাক্তার বা হাসপাতালে নিয়ে যান।
- কিংবা জ্বরের সাথে শ্বাসকষ্ট, পাতলা পায়খানা, বমি হলে বাসায় থাকা উচিৎ নয়। এসব লক্ষন প্রকাশের সাথে সাথে দ্রুত ডাক্তার বা হাসপাতালে নিয়ে যান।
শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
- শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে জনপ্রিয় ও বিজ্ঞান সম্মত উপায় হলো স্পঞ্জ করা। এর মানে কুসুম গরম পানি করে জীবাণুমুক্ত কাপড় দিয়ে সমস্ত শরীর মুছে দিবেন।
- স্পঞ্জ করার পর হালকা ফ্যানের বাতাসে বাচ্চাকে রাখুন।
- মাথায় পানি বা কাপড়ের পট্টি দেয়া যেতে পারে।
- জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়াতে হবে। ০৬ ঘণ্টা পর বয়স ও ওজনভেদে ডোজ প্রয়োগ করতে হবে।
- জ্বর ১০২ ফারেনহাইট হলে মলদ্বারে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে।
- প্রচুর পরিমানে তরল খাবার বেশি বেশি খেতে দিতে হবে যেমন ডাবের পানি, খাবার স্যালাইন, ফলের রস, শরবত ইত্যাদি
- টকজাতীয় মানে ভিটামিন সি জাতীয় ফল যেমন জাম্বুরা, আমড়া, কমলা, লেবু, ইত্যাদি খাওয়ানো যেতে পারে।
- খাওয়াতে জোর না করে প্রোটিন, ভিটামিন তথা পুষ্টিকর খাবার স্বাভাবিক নিয়মে চালিয়ে যেতে হবে।
- নিজে নিজে বাতব্বরি করে, বেশি বুঝে অনলাইন বা ইউটিউব থেকে দেখে মেডিসিন ও অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো শুরু করবেন না।
বিঃদ্রঃ শিশুর ঘন ঘন জ্বর হলে,জ্বর ০৩-০৪ দিন স্থায়ী হলে জ্বরের আসল কারণ খুঁজতে হবে। তখন শিশু চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মেডিসিন গুলা নিতে হবে।