বিগত দুই বছর ধরে করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের আরেক নাম। ভাইরাসটি ক্ষণে ক্ষণে রুপ বদলে আগের থেকে ভয়ংকর হয়ে উঠছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অল্প বয়সীদের জন্য ও ভয়ংকর আকার নিচ্ছে। আগে শুধুমাত্র জ্বর-ঠান্ডা-শ্বাসকষ্ট- বমি এই ধরনের উপসর্গ দেখা গেলেও এখন রূপ পরিবর্তিত হয়ে শরীরে নানা রকমের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।যেমন ক্লান্তি, ক্ষুধামান্দ্য, মাথাব্যথা, ডায়রিয়া, মানসিক বিভ্রান্তি, গলাব্যথা, পেশিব্যথা, ত্বকে র্যাশ, হাত ও পায়ের আঙুলের রং বিবর্ণ হয়ে যাওয়া।
করোনা ভাইরাসের নতুন লক্ষণ সমূহ
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয় করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন কিছু উপসর্গ সম্পর্কেঃ
১।কনজাংটিভাইটিস বা চোখের প্রদাহঃ
‘কনজাংটিভাইটিস’ বা চোখ ওঠাকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ বলে দাবি করা হচ্ছে। চোখ ওঠার সমস্যায় চোখ লাল হয়, জ্বলুনি হয়, ফুলে যায়, পানি পড়ে এবং প্রচুর ময়লা জমে চোখ খুলতে কষ্ট হয়।
যারা করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপে নতুনভাবে সংক্রমিত হয়েছেন; তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের চোখে লালচে ভাব লক্ষ্য করা গেছে। চোখ লাল হয়ে ফুলে গেছে এমন ১২ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাদের ১১ জনই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত।
২।স্পর্শকাতর ত্বকঃ
কোভিডের নতুন নতুন লক্ষণ প্রকাশ্যে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বকের যে কোনও পরিবর্তনই করোনা ভাইরাসের লক্ষণ হতে পারে। সারা শরীরে ফোলা ভাব কিংবা পেটের উপরের অংশটা বেশি মাত্রায় স্পর্শকাতর হয়ে যাওয়াও করোনার নতুন উপসর্গ ভাবা হচ্ছে।
৩।শ্রবণশক্তি কমে যাওয়াঃ
হঠাৎ করে কানে না শোনার সমস্যাকেও কোভিডের নতুন লক্ষণ ধরা হচ্ছে – এমনটিই মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ হঠাৎ শ্রবণশক্তি কমে যাওয়াও হতে পারে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ।করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে শ্রবণশক্তি কমতে পারে। কানের মধ্যে শোঁ শোঁ শব্দ হতে পারে ।
৪।গ্যাস্টিকের সমস্যাঃ
সাধারণত সবারই কমবেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে। বিশেষ করে যারা জাঙ্কফুড বেশি খেয়ে থাকেন। তবে এ সমস্যাকে এখন সাধারণ না ভাবাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ করোনার উপসর্গ হতে পারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।
৫।শারীরিক দুর্বলতা ও আলসেমিঃ
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় শারীরিক দুর্বলতা ও আলসেমিকে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রায় সবাই প্রচণ্ড ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভব করেন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই।
৬।ঠোঁটের শুষ্কতাঃ
হঠাৎ করে ঠোঁট শুষ্ক থাকলে কোভিডের সময়ে তা চিন্তার বিষয়। কারণ এটি সংক্রমণের নতুন লক্ষণ হিসাবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণের শুরুতে অনেকেরই ঠোঁট শুষ্ক দেখায়। এই সমস্যা দেখলেই সতর্ক হওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
৭।পেটের গোলমালঃ
করোনাভাইরাস যেহেতু শ্বাসতন্ত্রকে আক্রান্ত করে, তাই এর সঙ্গে পেটের গোলমালের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে সেটা ভাবতে না পারাই স্বাভাবিক। অনেক রোগীর মাঝেই ডায়রিয়া ও বমির সমস্যা দেখা গেছে। তাই এই সময় বমি ও ডায়রিয়াকে অবহেলা না করার পরামর্শ চিকিৎসকদের। আর শুধু শ্বাসতন্ত্রেই নয়, বৃক্ক, যকৃত ও অন্ত্রেরও ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে এই ভাইরাস।
৮।নখে সংক্রমণঃ
করোনার নতুন লক্ষণে নখ এবং পায়ের আঙ্গুলের উপর অস্বাভাবিক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণে পায়ের আঙুলে লালচে হয়ে যাওয়া কিংবা ফুলে যাওয়ার কথা বেশ অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নখে কালচে বা সাদা রেখার মতো দাগ দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব করোনাকেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। মাস্ক পরা, বারবার হাত ধোয়া আর দূরত্ব মেনে চলার বিকল্প নেই। অপ্রয়োজনীয় চলাচল ও ঘোরাঘুরি বাদ দিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে যে শিথিলতা চলছে, তা অবশ্যই দূর করতে হবে।
টিকা নেওয়ার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করার ব্যাপক উদ্যোগ নিতে হবে। যে টিকা দেশে দেওয়া হচ্ছে, সেটির দুই ডোজ নেওয়ার ন্যূনতম ১৪ দিন পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়। তাই এই সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। সুতরাং টিকা নেওয়ার আগে ও পরে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
করোনা ভাইরাসের নতুন লক্ষণ কি কি,করোনা ভাইরাসের নতুন লক্ষণ সমূহ,করোনা ভাইরাসের নতুন লক্ষণ ২০২৩,করোনা ভাইরাস নতুন লক্ষণ,করোনা ভাইরাস নতুন লক্ষন, করোনা ভাইরাস এর নতুন লক্ষণ, নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের লক্ষণ