যেভাবে ৪১ তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবেন!

Any viva is a game. এই গেইমে নিজেকে পণ্ডিত প্রমাণ করা নয় – কনভিন্স করে জিততে হয়। কনভিন্স করার জন্য দুটো জিনিস প্রয়োজন হয় – Confidence & modesty. ভাইভাতে অনেক প্রশ্নই কমনসেন্স থেকে করে। আর সেগুলোর জন্য আত্মবিশ্বাস আপনাকে এগিয়ে রাখবে। তাই কনফিডেন্ট হোন। কত যদু, মধু ভাইভাতে কত ভালো করছে, তাহলে আমি কেন নয়। এই ভাবটা অন্তর দিয়ে অনুভব করুন। কনফিডেন্স আসবে। এরপর বিনয়।

বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি যেভাবে নিবেন

কোন বসই পণ্ডিত চায় না, একজন competent & loyal লোক চায়। আপনি নিজেও যদি ভাইভা নেন, তখন নিজেকে মনে হবে জ্ঞানবৃক্ষ আর পরীক্ষাত্রীদের মনে হবে অবোধশিশু, চারাগাছ। তাই পরীক্ষক কখনোই এক্সপেক্ট করেন না যে, পরীক্ষার্থী তাকে হাইকোর্ট দেখাবে। তাই অবশ্যই যে কোন অবস্থাতে বিনয়ী থাকতে হবে। ।

.

কিভাবে শুরু করবেন?

বিসিএস ভাইভা হয় মূলত ক্যাডার চয়েসের উপর। একটা নতুন বা পুরাতন যে কোন ভাইভা গাইড জোগাড় করুন। প্রশ্নের ধরন দেখুন। গাইড ও ইন্টারনেট থেকে ফার্স্ট আর সেকেন্ড চয়েজের সাধারণ বিষয়গুলি দেখে ফেলুন। তবে এর জন্য ঘুম হারাম করার কোন দরকার নাই। বিসিএস ভাইভার জন্য এগুলো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ না। তবে এগুলো না জানলে কনফিডেন্স আসবে না। গাইডের উত্তর ৯০% ক্ষেত্রে আপনার পছন্দ হবে না, তখন ইন্টারনেট দেখুন। কিছু জিনিস লিখে ফেলুন। এতে উত্তরগুলো গাইডের মত না, নিজের মত হবে।

গুরুত্বপূর্ন  ব্যাপারঃ

কয়েকটা কমন প্রশ্ন প্রায় সবাইকে করে। এগুলো নিজে তৈরি করে লিখে ফেলুন। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর গতানুগতিক না দিয়ে একটু আলাদা করে বলতে চেষ্টা করুন। নিজের উত্তরের সাথে ইউনিক (আলাদা কিছু যা একান্তই আপনার) কিছু যোগ করতে পারলে – সেটা কাজে দেবে। এরকম কিছু কমন প্রশ্ন হলো –
  1. কেন বিসিএস দিচ্ছেন?
  2.  ফার্স্ট চয়েস এটা কেন?
  3.  আপনার একাডেমিক সাবজেক্টের সাথে ফার্স্ট চয়েস কিভাবে রিলেটেড?
  4. নিজ জেলা সম্পর্কে – জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি, নদী, জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, নামকরণ, জেলার বিখ্যাত কয়েকজন সিভিল সার্ভিস অফিসারের নাম।
  5. নিজের নাম বা জন্মদিনঃ নিজের নামে কোন বিখ্যাত ব্যক্তি থাকলে তাঁর কথা জেনে নিন। নিজের জন্মদিন কোন বিশেষ দিন হলে সেই দিনের ইতিহাস জেনে নিন।
এসব প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত টাইপ না, গল্প টাইপ করে বলতে পারলে ভাল হয়। গাইডের উত্তর না, একেবারে নিজের জীবনের কিছু বলতে পারলে সেটা বিশ্বাসযোগ্য হয়। যেমন, কেন বিসিএস দিচ্ছেন – এ প্রশ্নে আমার উত্তর ছিলো মোটামুটি এরকমঃ ‘স্যার আমি কিছুদিন সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করেছি। বিদেশী কোম্পানির আউটসোর্সিং কাজ। কিন্তু দিন শেষে বাসায় ফিরে মনে হতো – আমি কার জন্য কী করছি! এখানে বেতন ছাড়া আমার কোন প্রাপ্তি নেই। ছোটবেলা থেকে যেভাবে নিজেকে দেখতে চেয়েছি, প্রাইভেট জবে সেভাবে নিজেকে পাচ্ছি না, মানসিক শান্তি পাচ্ছি না। আমি দেশের জন্য আরো বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ চাই। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হতে পারলেই আমি সেই সুযোগটা পেতে পারি। এজন্যেই বিসিএস দিচ্ছি, স্যার।’
.

সাম্প্রতিক বিষয়ঃ

একেবারে সাম্প্রতিক বিষয়গুলোই প্রশ্নকর্তার মাথায় বেশি থাকে। এজন্য পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতার কয়েকটা কলাম প্রতিদিন পড়ুন। অনেকে টকশো দেখার কথা বলেন। কিন্তু এখন এত বেশি টকশো হয় যে, এতে প্রিপারেশানের সময় নষ্ট আর ইনফরেশান বিচ্যুতির সম্ভাবনা থাকে।

Common Sense of Viva:

ভাইভার কিছু কমন বিষয় যেগুলো আপনি জানেন। আমি আবার মনে করিয়ে দিচ্ছিঃ
(i) অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করুন। সালাম দিয়ে, অনুমতি নিয়ে বসুন।
(ii) স্মাইলিং ফেইস রাখা জরুরী।
(iii) আই-কন্টাকঃ ভাইভা বোর্ডের সবার সাথে আই-কন্টাক বজায় রাখুন। ভাইভা বোর্ডে ৩/৪ জন থাকেন। একটি প্রশ্ন যিনি করবেন, উত্তরের সময় তাঁকে মূল ফোকাস দিয়ে সবার দিকে অন্তত একবার তাকান। বিসিএস ভাইভাসহ অনেক ভাইভাতেই একজন মনোবিজ্ঞানী থাকেন। উনি কিচ্ছু বলেন না। চুপচাপ বসে থাকেন। ওনাকে অবহেলা করবেন না। অবশ্যই ওনাকেও আই কন্টাকে রাখুন।
(iv) পোশাকঃ মার্জিত কিন্তু নিজের জন্য কমফোর্টেবল পোশাক পড়ুন। সেটি স্যুট হতে পারে, শার্ট-প্যান্টের সাথে টাই, শাড়ি, সেলোয়ার-কামিজ যে কিছু হতে পারে। যেটা পড়লে আপনি নিজেকে একজন অফিসারসুলভ মনে করবেন, সেটাই পড়ুন। ৩৪-তম বিসিএসের ভাইভার আগে আমাকে এক পরীক্ষার্থী জিজ্ঞেস করল, ভাইয়া কোন টেইলার্স থেকে স্যুট বানাবো। সে ধরেই নিয়েছে, স্যুট তাঁকে পড়তেই হবে। আর টেইলার্সের খবর দিতে আমিই যোগ্য ব্যক্তি। কদিন পড়ে সে আবার খবর দিল, সে বারো হাজার টাকা দিয়ে এক বিখ্যাত টেইলার্স থেকে স্যুট বানিয়ে ফেলেছে। বেশ মজা লাগলো। কিন্তু ওর এপ্রোচটাকে অবশ্যই পজিটিভলি নিলাম। সে যেটা ঠিক মনে করেছে, সেটা করে ফেলেছে। পোশাকের জন্য এটাই সঠিক এপ্রোচ।
(v) কোনমতেই argue করা বা তর্ক করা যাবে না। Interviewer যদি ভুলও বলে, তবে ভুলটা মেনে নিয়ে বিনয়ের সাথে নিজের টুকু যোগ করা যায়, তাঁর বেশি নয়।

প্রশ্ন কি ইংরেজীতে করবে?

ভাইভাতে ২/১ টা প্রশ্ন ইংরেজিতে করে। আর যাদের ফরেন ফার্স্ট চয়েস, তাঁদের বেশিরভাগ প্রশ্নই ইংরেজীতে করতে পারে। বিদেশি ভাষায় সবারই সমস্যা থাকে। তাই এই সমস্যা নিয়া ভাবার দরকার নাই, ভাবুন এটা সবারই জন্য কম-বেশী একই। ইংরেজী বলার ভীতিটা যাদের বেশি, তাঁরা দুটি কাজ করতে পারেনঃ
  1.  কমন প্রশ্নগুলার ইংরেজী উত্তর নিজে নিজে বলে সেটি মোবাইলে রেকর্ড করুন। এরপর শুনুন। নিজেই বুঝবেন কিভাবে বললে আরও ভালো হতো। পরের বার রেকর্ডে অবশ্যই উন্নতি হবে। এ্যাঁ, আঁ, উঁ …এসব বাদ দিয়ে ইংরেজী বাক্য স্মার্টলি শেষ করার জন্য এর চেয়ে ভালো টেকনিক আর নেই।
  2. কমন প্রশ্নগুলার ইংরেজী উত্তর প্রেমিক/প্রেমিকা/বন্ধুর কাছে বলতে পারেন। আফসোস, আমার প্রেমিকা সেই সময় কাছে আসলে, তাঁর সাথে কালিদাসও আসত – ‘মেঘদূত’ হাতে নিয়ে। তাই পরীক্ষার আলাপ পাত্তাই পেত না। আপনার তো সেই সমস্যা নেই।
যেভাবে বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবেন।
visa.kfplanet.com

বিসিএস ভাইভা,বিসিএস ভাইভা প্রস্তুতি,বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা,বিসিএস ভাইভা প্রশ্ন,বিসিএস ভাইভা বই,বিসিএস ভাইভা প্রশাসন,বিসিএস ভাইভা pdf,বিসিএস ভাইভা প্রশ্ন ও উত্তর,বিসিএস ভাইভা বই pdf,বিসিএস ভাইভা introduce yourself,বিসিএস ভাইভা সহায়িকা pdf,বিসিএস ভাইভা গাইড pdf,বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা pdf,kfplanet.com,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেনঃ kfsoft@yahoo.com যে কোন প্রয়োজনেঃ kfplanetbd@gmail.com